ই-এশিয়া ২০১১ সম্মাননা পুরস্কার অর্জন:
তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিশেষ অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক জুরি বোর্ডের বিচারে ওয়ার্ল্ড এডুকেশন জুরি চয়েস পুরস্কারে ভূষিত হয় যশোর ডিসি অফিসের জেলা ই-সেবা কেন্দ্র। ই-এশিয়া সামর্থের উন্নয়ন (বিল্ডিং ক্যাপাসিটি), জনমুখী যোগাযোগ (কানেক্টিং পিপল), নাগরিক সেবা (সারভিং সিটিজেন্স) ও অর্থনৈতিক চালিকাশক্তি (ড্রাইভিং ইকনমি)-এই চারটি ক্যাটাগরিতে মোট ১৬টি পুরস্কার দেয়া হয়। এর মধ্যে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ নয়টি, ভারত তিনটি, বৃটেন, যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম ও ফিলিপাইনের একটি করে প্রকল্প রয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়ার জন্য ই-এশিয়ার ওয়েবসাইটে আবেদন চাওয়া হয়েছিল। শতাধিক প্রকল্প থেকে প্রাথমিক বাছাইয়ে ৩৩টি প্রকল্প মনোনয়ন পায়।
যশোর ডিসি অফিসের জেলা ই-সেবা কেন্দ্রের এ অর্জন সারা দেশের জন্য গৌরব বয়ে এনেছে।
*শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক হিসাবে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষাপদক ২০১২ অর্জন।
*শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক হিসাবে টেকসই ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র পুরষ্কার ২০১২ অর্জন।
*শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক হিসাবে একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্প পুরষ্কার ২০১৩ অর্জন।
অন্যান্য অর্জনঃ
জেলা ই-সেবা কেন্দ্রে:
জেলা প্রশাসনের প্রশাসনিক এবং সেবা প্রদানের কাজকে সহজ ও আরও দক্ষ করার জন্য জেলা ই-সেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে নাগরিক বা সরকারী পত্র গ্রহণ করা হচ্ছে। আবেদনসমূহ তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসক বা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হয়ে অনলাইনে সংশ্লিষ্ট শাখায় চলে যাচ্ছে। শাখা থেকে অনলাইন ফাইলে পেশ হয়ে সিদ্ধান্তের জন্য জেলা প্রশাসক বা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের কাছে চলে যাচ্ছে এবং সিদ্ধান্তসহ অনলাইনেই ফেরত আসছে। পরে এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পত্র পেশ হচ্ছে এবং হার্ড কপিতে পত্র জারি হচ্ছে। এ সার্ভিসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে-
-পত্র গ্রহণকালে আবেদনকারীকে পত্র গ্রহণ নম্বর, গ্রহণের তারিখ এবং সেবা প্রদানের তারিখ উল্লেখ করে একটি রিসিপ্ট দেওয়া হয়।
-নাগরিকদের সেবা প্রাপ্তির জন্য ডেস্কে ডেস্কে ধারণা দিতে হয় না।
-পত্র বা নথি অনলাইনে মজুদ থাকায় ইচ্ছা করলেই কেউ নথি বা পত্র গায়েব করতে পারে না।
-অফিসের বাইরে থেকে ও অনলাইন সুবিধা থাকলে কর্তৃপক্ষ নথিতে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন।
-উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যে কোন অবস্থান থেকে অধ:স্তনদের ফাইলের কাজ মনিটর করতে পারেন।
-অনলাইনে কাজ সম্পাদিত হয় বিধায় কাগজের ফাইল বহন করতে হয় না এবং লাল ফিতার দৌরাত্ম নেই।
ইউডিসি (UDC)এবং পিডিসি(PDC)থেকে পর্চা প্রদান:
যশোর জেলায় একজন নাগরিক ডিসি অফিসের বা উপজেলার ই-সেবা কেন্দ্রে না গিয়ে বাড়ির কাছের যে কোন ইউনিয়ন পরিষদের ইউনিয়ন ডিজিটাল কেন্দ্র (UDC) অথবা পৌরসভার পৌর ডিজিটাল কেন্দ্র(PDC) তে গিয়ে পর্চা বা খতিয়ান আদেশ নামার নকল প্রাপ্তির আবেদন করতে পারছেন। একই উদ্দেশ্যে UDC অথবা PDC থেকে তারা সরাসরি অন লাইনে জেলা তথ্য বাতায়নের (Distic web portal) মাধ্যমেও আবেদন করতে পারছেন। অনলাইনে আবেদনের মাধ্যমে নাগরিকগণ মাত্র তিন দিনের মধ্যেই জমির পর্চা বা খতিয়ান বা আদেশ নামার নকল পাচ্ছেন, যা পেতে আগে অন্ততঃ এক মাস অপেক্ষা করতে হতো এবং এ কাজে ডিসি অফিসে কয়েকবার যাতায়াত করা লাগতো বা কোন মোহরারের পেছনে ধরনা দেয়া লাগতো।
এ পদ্ধতির অন্যান্য সুবিধাসমূহ:
-আবেদনকারীকে আইডি নম্বরসহ প্রাপ্তি স্বীকারপত্র প্রদান।
-সেবা প্রাপ্তির সম্ভাব্য তারিখ প্রদান।
-ওয়ান স্টপ কাউন্টারে এসে সরাসরি এসএমএস করে ফোনের মাধ্যমে, ডাকযোগে বা ওয়েব সাইটের মাধ্যমে সেবা
প্রাপ্তির সর্বশেষ অবস্থা জানতে পারার সুবিধা।
-সময়মত পর্চা বা খতিয়ান বা আদেশ নামার নকল সরবরাহ।
-ভোগান্তি হ্রাস ও দালালদের ফাঁদ থেকে মুক্তি।
প্রাথমিক বিদ্যালয় মনিটরিং সিস্টেম:
www.jessoreeducation.gov.bdনামে একটি শিক্ষা পোর্টাল আছে যেখানে নাগরিকগণের পাশাপাশি সকল কর্তৃপক্ষ প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহের তথ্য এবং কার্যক্রম মনিটর করতে পারে। এছাড়া বর্তমানে জেলার প্রত্যেকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি করে ওয়েবসাইট আছে। ওয়েবসাইটে স্কুলের সংখ্যা, ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা, শিক্ষক সংখ্যার তথ্য সংযোজিত আছে। প্রত্যেকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসএমএস (sms) এর মাধ্যমে প্রত্যেক দিনের স্কুলের উপস্থিতির হর জানিয়ে দিতে পারে ফলে সহজেই স্কুল সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। প্রশাসকের পক্ষ থেকে কোন মিটিং, নোটিশ বা চিঠি এক ক্লিকের মাধ্যমে সহজেই সব স্কুলে পাঠানো যাচ্ছে।
অনলাইন এপয়েন্টমেন্ট:
জেলা প্রশাসকের সাক্ষাৎ পেতে সাক্ষাৎ প্রত্যাশীদের বিড়ম্বনার অন্ত থাকে না। এই সমস্যা সমাধানে যশোর জেলা ওয়েব পোর্টালে সংযোজিত হয়েছে অনলাইন এপয়েন্টমেন্ট এর সুবিধা। (www.jessore.gov.bd) এই লিংক এর মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর অনুরোধ দাখিল করা হলে সাথে সাথে জেলা প্রশাসক বা সংশ্লিষ্ট অফিসার একটা মেইল এর মাধ্যমে বিষয়টি অবগত হয়। ই-মেইলের জবাবে তার সুবিধামত সঠিক সময় নির্বাচন করে সহজেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অবহিত করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট সময় ঠিক করে দিতে পারে।
এর ফলে নিশ্চিত হচ্ছে:
-জেলা প্রশাসক বা অন্য কোন অফিসারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট এর সহজ প্রাপ্তি।
-সাক্ষাৎ প্রত্যাশীদের অর্থ ও সময় দুই-ই সাশ্রয়।
-সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা।
-‘জনগণের জন্য প্রশাসন’ এ ধারণা জনগণের মনে প্রতিষ্ঠা।
অনলাইনে নোটিশ/ রেজুলেশন:
জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন বিভাগের কার্যক্রম সংক্রান্ত মিটিং এর নোটিশ পাঠানো এবং মিটিংসমূহের গৃহীত সিদ্ধান্ত কার্যবিবরণী আকারে প্রকাশ করতে জেলা প্রশাসন নিয়েছে যুগোপযোগী পদক্ষেপ। যশোর জেলার পোর্টাল বাতায়ন বা ওয়েব পোর্টাল http://www.jessore.gov.bd এ জেলা প্রসাশনে অনুষ্ঠিত সকল সভার নোটিশ ও রেজুলেশন সন্নিবেশিত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে প্রতি মাসে ১/ ২ তারিথের মধ্যে নোটিশ আপলোড করা থাকে। এতে-
-সরকারের অনেক খরচ কমেছে।
-সভাগুলোতে উপস্থিতি বাড়ছে।
-দাপ্তরিক কাজে কাগজের বিশাল অপচয় রোধ পাচ্ছে।
-শ্রম ঘন্টা সাশ্রয় হচ্ছে।
গ্রুপ এসএমএস সিস্টেম:
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত যে কোন মিটিং বা আলোচনায় উপস্থিত থাকার জন্য এখন আর আলাদাভাবে কোন কর্মকর্তা বা কর্মচারীকে মুখে বলতে বা লিখিত নোটিশ পাঠাতে হয় না। মোবাইল এবং ইন্টারনেট প্রযুক্তি এর সমন্বয়ে যশোর জেলা প্রশাসন গ্রহণ করেছে একটি বাস্তব ও যুগোপযোগী পদ্ধতি গ্রুপ এসএমএস সিস্টেম।
www.e-service.gov.bd/smsনামে একটি ওয়েব লিংক আছে সেখানে জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সকল সভার সদস্যগণের নাম, পদবী এবং মোবাইল নম্বর দিয়ে অনুযায়ী সভা ভিত্তিক এসএমএস (sms) গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া জেলার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সকল মিডিয়া সাংবাদিকদের ও মোবাইল দিয়ে গ্রুপ তৈরি করা আছে। এখন যে কোন মিটিং এর সংক্ষিপ্ত নোটিশ এসএমএস আকারে লিখে যে কোন একটি গ্রুপ সিলেক্ট করে ক্লিক করে পাঠিয়ে দিলে গ্রুপে অন্তর্ভূক্ত সবাই একই সাথে এসএমএস (sms) টি পাচ্ছে এবং এর মাধ্যমে নিশ্চিতভাবে সভার তারিখ ও সময় জেনে যাচ্ছে। এতে নোটিশ প্রাপ্তি নিশ্চিত হচ্ছে এবং দুরদুরান্তে লোক মারফত নোটিশ পাঠানোর ঝামেলা থাকছে না। সভায় উপস্থিতি বাড়ায় সভার কার্যকারিতা ও জবাবদিহিতা বেড়েছে।
অনলাইনে কোর্ট ফি প্রদান:
মোবাইল বিল রিচার্জ এর জন্য যশোর জেলা প্রশাসন নামে একটি ওয়েব সাইট চালু করেছে। জেলা প্রশাসন এটা দিয়ে কোর্ট ফি পরিশোধের ব্যবস্থা করেছে । রেকর্ড রুম থেকে পর্চা বা খতিয়ানের বা মামালার আদেশনামার কপির আবেদন করলে আবেদনে কোর্ট ফি সংযুক্ত করতে হয়। এ কোর্ট ফি সংগ্রহ করতে স্ট্যাম্প ভেন্ডারের নিকট গিয়ে সংগ্রহ করে পেষ্ট করতে হতো। স্ট্যাম্প সংগ্রহ করতে জেলা সদরে আসতে হতো। পর্চা বা খতিয়ানের বা মামলার আদেশনামার কপির আবেদন ইউআইএসসি তে আবেদন জমা কালে উদ্যোক্তা স্ট্যাম্প ফি বাবদ অর্থ গ্রহণ করে এবং তার হিসাব থেকে স্ট্যাম্প বাবদ গৃহীত অর্থ গ্রহণ করে এবং তার হিসাব থেকে স্ট্যাম্প বাদ গৃহীত টাকার রিচার্জ জেলা ই-সেবা সেন্টারের হিসাবে প্রেরণ করে। জেলা ই-সার্ভিস স্টোর তা দিয়ে কোর্ট ফি কিনে সংশ্লিষ্ট আবেদনে পেষ্ট করে। এ সার্ভিসের মাধ্যমে জনগণের ভোগান্তি হ্রাস হয়েছে।
মাল্টিমিডিয়া কাসরুম:
শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের পাঠ্যবইকে আকর্ষণীয় করে উপস্থাপন করতে এবং শ্রেণীকক্ষে পাঠদান পদ্ধতিতে যুগোপযোগী করতে যশোর জেলা প্রশাসন তিনটি স্কুলে পাইলট প্রকল্প হিসাবে মাল্টিমিডিয়া কাসরুমের ব্যবস্থা করেছে।
êশিক্ষকদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
êডিজিটাল কন্টেন্ট তৈরি ও পাঠদান পদ্ধতির উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
êকাস রুমগুলোতে অনলাইন সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।
আউটসোর্সিং ফোরাম:
যশোর জেলার বেকার যুবক যুবতিদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে যশোর জেলা প্রশাসন একটি আউটসোর্সিং ফোরাম গঠন করে একই ওয়েবে www.outsourcingforums.org একত্র করেছে। ফোরামে অংশগ্রহণে আগ্রহী যুবক-যুবতীদের আউটসোর্সিং এর উপর ট্রেনিং প্রদান করা হয়। ট্রেনিং প্রদানের পর তাদেরকে অনলাইনে আয়ের বিভিন্ন লিংক প্রদান করা হয় এবং অনলাইন একাউন্ট খুলে দেয়া হয়। এরপর তারা বিভিন্ন লিংকে গিয়ে কাজ করার মাধ্যমে উপার্জন করে তারা সাবলম্বী হবার প্রয়াশ পাচ্ছে। তথ্য প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনের প্রবণতা সৃষ্টি হচ্ছে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস